রেকর্ড মার্জিনে জয়ী হাজী নুরুল ইসলাম,সন্দেশখালি ইস্যু কাটিয়ে বসিরহাটে সবুজ সাইক্লোন।।
THE BENGALEE
বসিরহাট
গত কয়েকমাসে রাজ্য রাজনীতির ভর কেন্দ্র হয়ে ওঠে
সন্দেশখালি। যে সন্দেশখালি র ঘটনা কে হাতিয়ার করে বিরোধীরা, সেই সন্দেশখালি বিধানসভা সভা সমন্বিত বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে রেকর্ড মার্জিনে জয়ী হলো তৃণমূল।
নদী ঘেরা সন্দেশখালি ,শেখ শাহজাহান ইস্যু তে রাতারাতি শিরোনামে চলে আসে বসিরহাটের এই দ্বীপ কেন্দ্র।বিভিন্ন দুর্নীতি র প্রতিবাদে পথে নামেন গ্রামের মহিলারা।অবরোধ - বিক্ষোভ থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠে সন্দেশখালির মানুষের।গ্রেপ্তার হন শেখ শাহজাহান।তারপরেও চলতে থাকে বিক্ষিপ্ত অশান্তি। সন্দেশখালি ইস্যুতে সুর চড়ায় বিরোধী সব শিবির।এই কেন্দ্র কে পাখির চোখ করে বিরোধী শিবির।তাবড় নেতৃত্বের ঠাসা কর্মসূচীতে গ্রাম্য সন্দেশখালি হয়ে ওঠে রাজনীতির ভর কেন্দ্র। সন্দেশখালি ইস্যুতে ভর করে এই কেন্দ্রে জয়ের ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত হয় বিরোধী শিবুর।তবে ভোট পূর্ববর্তী পর্যায়ে ভাইরাল হয় বেশ কয়েকটি অডিও ক্লিপিং, তা নিয়ে রিতীমতো দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পরেন সাধারন মানুষ।
চব্বিশের বসিরহাট লোকসভা নির্বাচনের অন্যতম আলোচিত বিষয় যে সন্দেশখালি, সেখান থেকেই এবার নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন করে বিজেপি ও বাম -কংগ্রেস জোট।তবে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেয় তৃণমূলের প্রবীণ নেতা এই কেন্দ্রেরই প্রাক্তন সাংসদ হাজী নুরুল ইসলাম কে। দলের আস্থা র মর্যাদা রাখলেন হাজী নুরুল।ফের একবার বসিরহাটের হয়ে লোকসভায় প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার অর্জন করলেন এই প্রবীণ তৃণমূল নেতা।
গত দেড় মাসে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে বেশ কয়েকবার ভোট প্রচারে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে জিতলে সন্দেশখালি যাওয়ার কথাও শোনা যায় তৃণমূল নেত্রীর মুখে।সন্দেশখালির মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মমতা।সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো বলে বারবার অভিযোগ ও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অপরদিকে ভোট প্রচারে বসিরহাটে আসেন বিজেপির একাধিক হেভিওয়েট নেতৃত্ব। বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় নেতৃত্বের নাম করে তাদের বিরুদ্ধেও সুর চড়াতে শোনা যায় বিরোধী দলনেতা কে। চলে রাজনৈতিক তরজা। তবে সব কিছুর শেষে ফের মমতা - অভিষেকেই ভরসা রাখলেন সন্দেশখালি তথা বসিরহাটের মানুষ।
মঙ্গলবার ভোট গণনার শুরু থেকেই পাল্লা ভারী ছিলো তৃণমূলের।ফলত কয়েক রাউন্ড গণনার পরই গণনা কেন্দ্র ছাড়েন বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। প্রতি রাউন্ড গণনার শেষে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের গ্রাফ ছিলো উদ্ধমুখী। সাময়িক তথ্য বিভ্রাট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। মোট ২১ রাউন্ড গণনা শেষে হাজী নুরুল ইসলাম, নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী বিজেপি প্রার্থীর থেকে ৩ লক্ষ ৩২ হাজার ৯৪৯ ভোটে জয়লাভ করেন।উল্লেখ্য সাত বিধানসভা সমন্বিত এই লোকসভা কেন্দ্রের ছটি তেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল।যে সন্দেশখালি নিয়ে এই লোকসভা কেন্দ্র সকলের নজরে ছিলো সেই বিধানসভায় বিজেপি জিতলেও, সেখানেও তৃণমূলের প্রতি আস্থা রেখেছে সাধারন মানুষ।সন্দেশখালি বিধানসভায় তৃণমূলের থেকে আট হাজার তিনশোর কিছু বেশী ভোট পেয়েছে বিজেপি। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল,বিজেপির পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে আই.এস.এফ প্রার্থী, চতুর্থ স্থানে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী।হাজী নুরুল ইসলাম বলেন, সন্দেশখালির মানুষ যেভাবে আমাকে সমর্থন করেছে আমি তাদের কাছে ঋণী, আমি তাদের উন্নয়নের পথ দেখিয়ে সেই ঋণ পরিশোধ করার চেষ্টা করবো,পাশাপাশি বসিরহাট লোকসভার মানুষ যেভাবে আমাকে আশীর্বাদ করেছে,সেই আশীর্বাদের মূল্য আমরা দেবো।সন্দেশখালিতে জমি জায়গা সংক্রান্ত কিছু সমস্যা আছে তা সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি।কর্মী সমর্থকদের কোনো রকম অশান্তিতে পা না দিতে আবেদন করেন হাজী নুরুল ইসলাম।
0 Comments