"কামান ইন্ডিয়া দিখাদো,দুনিয়া কো হিলাদো" থেকে "চাকদে, ওহ, চাকদে ইন্ডিয়া " কিংবা ল্যাহারো দো,ল্যাহারো দো " আর সর্বদা "বন্দে মা তরম" এই গান গুলির সঙ্গে বাস্তবের ভারতীয় ক্রিকেটের একাত্ম হওয়ার একমাত্র সা্ক্ষী আমাদের জেনারেশান।
সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বে বিশ্বজয়ের হাতছানি পেয়েও স্বপ্নভঙ্গের দিনে প্রাথমিকে পড়া আমরা বাড়িতে জাতীয় পতাকা আর প্লেয়ার দের ছবি টানিয়েছিলাম । স্বপ্নভঙ্গ হলেও শচীন -সৌরভের প্রতি আবেগ আর রাহুল,লক্ষন,
শেহওয়াগ,কুম্বলে,জাহির,ভাজ্জি,কাইফ দের সিংহের মুখ থেকে কোকাকোলা কেড়ো আনার ক্ষমতা, আমাদের ক্রিকেটীয় ঔদ্ধত্যের জাগরণ ঘটিয়েছিলো।
সৌরভ-শচীনের পর কার জন্য খেলা দেখবো ভাবতে ভাবতে কখন যে ধোনী-যুবি-ইরফান-গম্ভীর রা তাদের জায়গা নিয়ে নিয়েছিলো বুঝতেই পারিনি।প্রথম টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে আমরা তখন একাদশে,বায়োলজি টিচারের বাড়ি বসে সেদিন খেলা দেখেছিলাম। ধোনীর মস্তিস্ক,যোগিন্দর শর্মা,শ্রীশান্ত রা আজও আমাদের একাদশ সময়কার স্বপ্ন।
ধোনীর নেতৃত্বাধীন একদিনের বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী থেকেছিলাম নিজের বাড়িতেই, বিরাট -গৌতম -গম্ভীর-যুবির লড়াই আর মাস্টার ব্লাস্টারের হাতে ট্রফির চিত্র আজও মনের মনি কোঠায় উজ্জ্বল। সেদিন রাতের এপার বাংলার উচ্ছ্বাস আর উপচে পরা আবেগ হয়তো ওপার বাংলাও টের পেয়েছিলো।
শচীন যুগের শেষে, ধোনী-যুবির অবসরের সিদ্ধান্তে থমকে যাওয়া ক্রিকেটীয় ভালোবাসায় আবার আস্তানা খুঁজে দিয়েছিলো বিরাট কোহলী, রোহিত শর্মারা।।আন্ডার ১৯ থেকে সিনিয়ার ক্রিকেটার হয়ে ওঠা কোহলি, বারংবার বার ডাক হয়ে ফেরা একটা ক্রিকেটার থেকে বিশ্বজয়ী ক্যাপে্টেন রোহিতের ওঠা পরার সাক্ষী আমাদের জেনারেশান।ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামকে সৌরভের থাকা কালীন সময়ে এই দলে কোহলিকে ক্যাপ্টেন্সি থেকে সরানো থেকে রোহিতের ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে কত কথা হয়েছে, রোহিত কোহলীর সম্পর্ক নিয়ে কথা হয়েছো।এক মাস আগে হার্দিক রোহিতের সম্পর্ক নিয়ে কম কথা হয়নি, হার্দিক পান্ডিয়া কে নিয়ে ট্রোল করেনি এমন ক্রিকেট ভক্ত কমই ছিলো সেদিন।দিনের শেষে দেশের জন্য এরা নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করে একাত্ম।।।
জীবন থমকে যায় যে সময়,সবকিছুই চাওয়া পাওয়ার বিপরীত হয় সেই সময়েও নিজেকে স্থির রাখার, দৃঢ় রাখার ক্ষমতা আর দক্ষতা সত্যই শিক্ষনীয়। জীবনের প্রতিকুলতার মধ্যেও আশা না হারানোর, একাগ্র চিত্তে লড়ে যাওয়া থেকে জয় ছিনিয়ে আনার অন্যতম উদাহরণ হিসাবে গতকালকের খেলাটা থেকে যাক আমাদের জীবনের INSPIRATION হিসাবে।
ইতওমধ্যেই তিন তিনটি ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফি জেতার স্বাক্ষী থাকতে পেরেছি আমাদের জেনারেশান। গতকালকের ম্যাচের সাক্ষী থেকেছি নিজের ক্লাব থেকে।জীবনের তিনটি পর্যায়ে তিনটি পৃথক স্থানে তিনটি ট্রফি জয়ের সাক্ষী আমরা। বিরাট- অক্ষর থেকে জসপ্রীত কিংবা সূর্যকুমারের ক্যাচ, আর রোহিতের বিচক্ষনতা থেকে যাক টাইমলাইনে।গতকাল ভারত ম্যাচ হারলে কোহলীর ইনিংস নিয়ে কাটা ছেঁড়া হতো, রোহিত কে নিয়েও কথা হতো।কিন্তু আজ সবাই ওদের গুণমুদ্ধ।তাই জয় বা সাফল্য ই একমাত্র জবাব দিতে পারে, অন্য কিছু নয়।
রো-কো জুটির শেষে আজ যদি ভাবি ক্রিকেটে এদের ছাড়া সেই ভালোবাসা কি পাবো? সত্যই হয়ত রোহিত - কোহলি আর আসবে না, তবে এরা যেমন এদের পুর্বসুরীদের প্রতিস্থাপন করেছিলো তেমনই কুলদীপ,হার্দিক,জসপ্রীত থেকে জয়সাওয়াল, সঞ্জু,রিয়ান,অভিষেক ,গিল,রিঙ্কু,খলিল,পন্থরা আগামী কয়েকবছরের মধ্যে আমাদের ভরসা র স্থল হয়ে উঠবে আরও জয়ের সাক্ষী থাকবে আমাদের জেনারেশান। আগামীর দিনগুলো অনেক ভালো হোক রোহিত- কোহলীর,ভালো থাকুক প্লেয়ার থেকে কোচ হয়ে ওঠা দ্যা ওয়ালও।ভালো থাকুক ক্রিকেট। ক্রিকেটীয় মাধ্যমেই ইরফান পাঠান - নভজৎ সিধু-মহম্মদ সিরাজ- অর্শদীপ শিং - কোহলি- শর্মাদের চোখের জলে ধুয়ে যাক আমাদের দেশের সমস্ত বিচ্ছিন্নতা, কলুষতা,ক্রিকেট ই আমাদের আরো সম্পৃক্ত করুক আমাদের সহিষ্ণু করে তুলুুক।।
0 Comments